২. অপারেশন তেলআবিব-২

ডোবিনের গাড়ী এমিলিয়াকে নিয়ে চলে গেল। এমিলিয়ার মা আইরিনা টলতে টলতে বাড়ীর ভেতরে প্রবেশ করল। চলে গেল শোবার ঘরে।
ওখানে এমিলিয়ার পিতা ডেভিড সালেম চেয়ারে বসে গালে হাত দিয়ে বাইরে তাকিয়েছিল। কাঁচের জানালা দিয়ে তার দু’টি চোখ কোথায় হারিয়ে গিয়েছিল কে জানে।
আইরিনা তার গায়ে হুমড়ি খেয়ে পড়ে ডুকরে কেঁদে উঠল। তুমি কোন কিছু বললে না, কেন যেতে দিলে আমার এমিলিয়াকে? কেন কেন, কেন!
ডেভিড সালেম কিছুই বলল না। যেমন বসেছিল তেমনি বসে রইল। ঠিক বোবা মানুষের মত।
আইরিনা ডেভিড সালেমের গা থেকে গড়িয়ে পড়ে গেল মেঝেতে।
ডেভিড সালেম উঠে আইরিনাকে তুলে বলল, ধৈর্য ধর আইরিনা, ইহুদীরা আমরা ইসরাইলের স্বার্থকেই সবার ওপর স্থান দিয়েছি।
-মানি না এ কথা।
-মানতে হবে আইরিনা, ব্যক্তির জন্যে দেশের স্বার্থ বিকিয়ে দেব কেমন করে?
-দেশের স্বার্থ বিকিয়ে দেবার প্রশ্ন কেন, আমার এমিলিয়া নির্দোষ।
-তুমি বললেই তো সবাই একথা বলবে না আইরিনা!
-আমার এমিলিয়া যা জানে সত্য সত্যই সব বলেছে!
-সত্য বলেই তো আরো জড়িয়ে পড়েছে!
আইরিনা আবার ফুপিয়ে কেঁদে উঠল, না, আমি এসব কিছু বুঝি না। প্রধানমন্ত্রী তোমার পিতার লোক, তাকে তুমি বল, আমার এমিলিয়াকে ফিরিয়ে আন।
ডেভিড সালেম আইরিনাকে সান্ত্বনা দিয়ে বলল, আমাকে এ অনুরোধ করো না, আমি এ কথা তাকে বলতে পারবো না।
এক ঝটকায় উঠে দাঁড়াল আইরিনা। চিৎকার করে বলল, তুমি এত নিষ্ঠুর। তুমি পিতা না? তুমি কি জান না, সিনবেথ কোন নরপশুদের আড্ডা?
বলে কান্না চাপতে চাপতে ঘর থেকে ছুটে বেরিয়ে গেল আইরিনা।
চেয়ারে ফিরে এল সালেম। আইরিনার শেষ কথাগুলো প্রতিধ্বনিত হচ্ছিল তার অন্তরে, তুমি পিতা না? তুমি জান না, সিনবেথ কোন নরপশুদের আড্ডা?
অন্তরটা তারও হাহাকার করে উঠল। এমিলিয়ার অসহায় মুখটি ভেসে উঠল তার চোখে। দু’চোখ ফেটে তার নেমে এল অশ্রু, মাথাটা নুয়ে পড়ল টেবিলে। অবরুদ্ধ কান্নার বাঁধভাঙ্গা উচ্ছাসে কেঁপে উঠতে লাগল তার শরীর। | ← Previous | | | Next → | | সম্পুর্ণ বই এক পেজে »
Top