তার সাথে হাঁটছে কামাল সুলাইমান, মিসেস সুলাইমান, বুমেদীন বিল্লাহ ছাড়াও তাদেরকে ‘সি অফ’ করতে আসা ড. ইয়াহুদ, ম্যাডাম ইয়াহুদ, নুমা ইয়াহুদ, নিউইয়র্কের মুসলিম কম্যুনিটির নেতৃবৃন্দ এবং নিউইয়র্কের এফ.বি.আই চীফ ও নিউইয়র্ক ষ্টেটের প্রধান প্রটোকল অফিসার।
গ্যাংওয়েতে ঢোকার আগে আহমদ মুসা ঘুরে দাঁড়িয়ে সবার সাথে বিদায়ী হ্যান্ডশেক করল।
একপাশে দাঁড়িয়ে নুমা ইয়াহুদ ও বুমেদীন বিল্লাহ একান্তে আলাপ করছিল। আহমদ মুসার হ্যান্ডশেক শেষ হতেই নুমা ইয়াহুদ ও বুমেদীন বিল্লাহ একসাথে এগিয়ে এল আহমদ মুসার কাছে।
আহমদ মুসা একটু হেসে বলল, ‘কি দুজনের তরফ থেকে কোন সুখবর আছে?’
নুমা ইয়াহুদের মুখ লাল হয়ে উঠল লজ্জায়। আহমদ মুসাকে সালাম দিয়ে আহমদ মুসার হাতে একটা ছোট্ট ইনভেলাপ তুলে দিয়ে ছুটে পালাল।
আহমদ মুসা ঘুরে দাঁড়িয়ে আবার হাঁটা শুরু করল। তার সাথে কামাল সুলাইমানরা।
এফ.বি.আই অফিসার আহমদ মুসার পিছনে হাঁটতে হাঁটতে বলল, ‘স্যার, আমার উপর হুকুম প্লেনে উঠা পর্যন্ত আপনার সাথে থাকার এবং প্লেন ‘টেক অফ’ করা পর্যন্ত অপেক্ষা করার।
‘ধন্যবাদ জনাব।’ বলল আহমদ মুসা।
প্লেনে উঠল আহমদ মুসা। সৌদি আরবের আল-মদিনা এয়ার লাইন্সের বিশেষ ফ্লাইট এটা। বিমানটি নন-ষ্টপ উড়ে একেবারে গিয়ে ল্যান্ড করবে মদিনা ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টে।
প্লেনের দরজায় আহমদ মুসাকে স্বাগত জানিয়ে জড়িয়ে ধরল ফ্লাইটের ক্যাপ্টেন। তার ক্রুরা সহাস্যে পরমাত্মীয়ের মত স্বাগত জানাল আহমদ মুসাকে। ক্যাপ্টেন বলল, ‘আমাদের সৌভাগ্য, এই ফ্লাইটের সৌভাগ্য যে, আপনার মত এক মহান ভাইকে আতিথ্য দেবার ভাগ্য আমাদের হয়েছে।’
সবাইকে মোবারকবাদ দিয়ে আহমদ মুসা বসল গিয়ে তার সিটে।
প্লেন উড়তে শুরু করলে আহমদ মুসা নুমা ইয়াহুদের দেয়া চিঠি বের করল। ইনভেলাপ থেকে একটা ছোট্ট ই-মেইল বের হলো। দেখল, ই-মেইলটি সারা জেফারসনের। পড়ল:
‘আসসালামু আলাইকুম। টেলিফোনে তাৎক্ষণিকভাবে উত্তরটা দিতে পারিনি বলে দুঃখিত। আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে খোঁজ নিয়ে দেখলাম, শর্ট কোর্সটিতে কয়েক দিনের ব্রেক হলে কোর্সটাই অর্থহীন হয়ে যাবে। তাই আপনাদের আমন্ত্রণে ‘না’ বলারই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। দূরে থাকলেও আমাদের নতুন ‘সোনামণি’র জন্যে থাকবে আমার এক বুক ভালবাসা ও দোয়া। ওয়াস্সালাম। -সারা।’
ই-মেইল পড়া শেষ করে আহমদ মুসা তা আবার ইনভেলাপে পুরে ইনভেলাপটি পকেটে রাখল। মনে মনে বলল, ‘ই-মেইলটি জোসেফাইনের পড়া দরকার। কারণ তার অনুরোধেই সে সারাকে টেলিফোন করেছিল।’
আরও কিছু চিন্তা ও আরও কিছু কথা চারদিক থেকে ছুটে আসছিল মাথায়। আহমদ মুসা তাড়াতাড়ি মাথাটা সিটে এলিয়ে দিয়ে মাথাটাকে শূন্য করার উদ্যোগ নিল। বুজল সে তার চোখ।
অন্য সবাইও নীরব।
নীরবতা নেমেছে প্লেনের প্রথম শ্রেণীর এ কক্ষটিতে।
প্লেনের বাতাস কেটে সাঁতরে চলার শব্দ ছাড়া আর কোন শব্দ কোথাও নেই।
ছুটে চলছে প্লেন মদিনার উদ্দেশ্যে। | ← Previous | | | Next → | | সম্পুর্ণ বই এক পেজে »
৪০. কালাপানির আন্দামানে

Tags